এই পদক আমার কাছে ‘বিশেষ’ : ঋতুপর্না

এই পদক আমার কাছে ‘বিশেষ’ : ঋতুপর্না
প্রকাশিত

দেশের নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রায় নিজেকে প্রতিনিয়ত প্রমান করে এগিয়ে যাওয়া তারকা ফুটবলার ঋতুপর্না চাকমা এবার পেলেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৫’।

নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পদক তুলে দেন তিনি।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন- নারীশিক্ষা শ্রেণিতে (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকার শ্রেণিতে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার শ্রেণিতে নাবিলা ইদ্রিস ও নারী জাগরণ শ্রেণিতে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা।

নারীশিক্ষা ও অধিকার আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী ও ৯৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। নানা আয়োজনে দিনটি পালন করছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর আগে দলীয়ভাবে বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এ বছরই সাফ জয়ী বাংলাদেশ দলকে একুশে পদক প্রদান করা হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত এই সম্মাননা পেয়ে দারুন উচ্ছসিত রাঙ্গামাটির মেয়ে ঋতুপর্না। 

তাইতো এই পুরস্কার তার কাছে বিশেষ কিছু, ‘প্রতিটি পুরস্কারই সম্মান ও গৌরবের। এই বছরই একুশে পদক পেয়েছি। যা অত্যন্ত গৌরবের। সেটা ছিল দলীয়। এবার ব্যক্তিগতভাবে রোকেয়া পদক পেয়েছি, সরকারের এই পদকটি তাই আমার কাছে বিশেষ।’

উচ্ছসিত ঋতুপর্ণা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘যেকোনও পুরস্কার বা সম্মাননা আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। এটি আমাকে অনেক উৎসাহ দেয়। এই প্রথম কোনও ফুটবলার রোকেয়া পদক পেলো, তাই এটা আমার কাছে বিরাট সাফল্য মনে হচ্ছে। আমি খুব, খুব খুশি।

প্রতিটি খেলোয়াড় দেশের জন্য লড়েন। সব খেলোয়াড়ই কষ্ট করে উঠে আসেন। এমন একজন ব্যক্তির নামে এমন পদক পাওয়ার পর আমার দেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আরও বেড়েছে। এই পদকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ ও সমাজকে আরও কিছু দেওয়ার চেষ্টা করব।’

২০২১ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছেন ঋতুপর্ণা। বাংলাদেশের জার্সিতে ৩৩ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। ২০২৪ সাফে হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশ দুইবার শিরোপা জয় করে। প্রথমবারের মত এশিয়ান কাপে মূল পর্বে অংশ নিতে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছে নারী দল। এসব সাফল্যের পিছনে ঋতুপর্নাদের অবদান অনস্বীকার্য। 

কিন্তু ‎ঋতুপর্ণার এত দূর আসাটা সহজ ছিল না। মা ভূজোপতি চাকমা দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০১৫ সালে বাবা বরজ বাঁশি চাকমা মারা যান, তখন ঋতুপর্নার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। ২০২২ সালের জুনে দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ছোট ভাই পার্বণ চাকমার। কিন্তু তারপরও থেমে থাকেননি ঋতুপর্না। দেশকে কিছু দেবার প্রয়াসে এগিয়ে গেছেন স্বমহিমায়। তারই স্বীকৃতিস্বরুপ আজ তার হাতে উঠলো নারী অগ্রযাত্রায় দেশের এই রাষ্ট্রীয় সম্মান।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com