
সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ! একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে র্যাঙ্কিংয়ে অন্তত নয় নম্বরে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। হাতে এখনো সময় ও ম্যাচ থাকলেও মিরপুরের ঘূর্ণি উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হাতছাড়া হয়েছে এক বড় সুযোগ।
সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতলেই রেটিং পয়েন্টে ক্যারিবীয়দের ছাড়িয়ে নবম স্থানে ওঠা সম্ভব ছিল মেহেদী হাসান মিরাজদের পক্ষে। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুপার ওভারে ১ রানে হারায় সেই সম্ভাবনা নিভে গেছে।
সিরিজ শুরুর আগে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ছিল দশে, রেটিং পয়েন্ট ৭৪। নয় নম্বরে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট ৮০। ৩-০ ব্যবধানে জিততে পারলে মিরাজদের পয়েন্ট দাঁড়াত ৭৮, আর ক্যারিবীয়দের নামত ৭৬-এ। তাতে নবম স্থানে উঠে আসত বাংলাদেশ। কিন্তু এখন ১-১ সমতায় সিরিজে এগোনো সম্ভব হয়নি। বরং শেষ ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করছে র্যাঙ্কিংয়ের ভবিষ্যৎ চিত্র।
প্রথম ওয়ানডেতে রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে ৭৪ রানের জয়ে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একই উইকেটে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে গতি পায়নি কেউই। আগে ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের ৪৫ ও মিরাজের ৩২ রানের ধীর ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১৩। শেষদিকে রিশাদের ১৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে পুঁজি সামান্য বাড়লেও সেটি জয় পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়নি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও বিপাকে পড়েছিল। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু অধিনায়ক শাই হোপ ৬৭ বলে ৫৩ রানে দলকে ভরসা দেন। শেষ পর্যন্ত তাদেরও ইনিংস থামে ২১৩ রানে। ফলে তিন ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইয়ের অভিজ্ঞতা পায় বাংলাদেশ।
মুস্তাফিজুর রহমানের করা সুপার ওভারে শেষ বলে বাউন্ডারি হজম করে বাংলাদেশ দেয় ১০ রানের লক্ষ্য। আকিল হোসেনের করা ওভারে নো বল ও ওয়াইডে ১ বলেই ৫ রান উঠলেও পরের ৫ বলে ৬ রান দরকার ছিল। সেখানে সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে তুলতে পারেন কেবল ৪ রান।
ফলে ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ-যে হারে শুধু ম্যাচ নয়, র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতির সুযোগও হারিয়ে যায়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ওয়ানডে জিতলে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট বাড়বে ৭৬-এ, আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কমে হবে ৭৯। কিন্তু যদি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, উভয় দলের রেটিং থাকবে আগের মতোই-বাংলাদেশ ৭৪, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮০। উল্টো যদি ক্যারিবীয়রা জিতে যায়, তাদের পয়েন্ট বেড়ে হবে ৮১, বাংলাদেশের কমে দাঁড়াবে ৭৩।
২০২৭ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নিতে হলে বাংলাদেশের সামনে এখন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই একমাত্র পথ। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের নয় নম্বরের নিচে থাকলে দলকে খেলতে হবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে, যেখানে আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, এমনকি স্কটল্যান্ডের মতো দলও লড়বে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য।
ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানও আশাব্যঞ্জক নয়-সর্বশেষ ১২ ম্যাচে জয় মাত্র একটিতে। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজ ছিল মনোবল ফেরানোর, র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্য ঘোচানোরও সুযোগ। কিন্তু কালো মাটির ঘূর্ণিতে সেই মঞ্চেই আবারও থমকে গেল মিরাজ-তাসকিনরা।
এখন চোখ শেষ ওয়ানডেতে। জিতলেই সিরিজ র্যাঙ্কিংয়েও সামান্য অগ্রগতি। হারলেই আরও নিচে নামবে দল!