গত কয়েক মাসে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন এক উদ্বেগের নাম হয়ে উঠেছে র্যাম (RAM)। আগে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকা এই হার্ডওয়্যার পণ্যের দাম সম্প্রতি হঠাৎ করেই বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, র্যামের এই মূল্যবৃদ্ধি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজারের বড় পরিবর্তনের প্রতিফলন।
AI চাহিদা ও বৈশ্বিক চাপ
র্যাম বাজারে অস্থিরতার অন্যতম প্রধান কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির দ্রুত বিস্তার। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার, ক্লাউড সার্ভিস ও এআই-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মগুলো বিপুল পরিমাণ মেমরি ব্যবহার করছে। এর ফলে সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ের র্যামের সরবরাহে চাপ তৈরি হয়েছে।
একই সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ মেমরি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আগের তুলনায় উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ সীমিত—এই সমীকরণে দাম বাড়া ছিল অনেকটাই অনিবার্য।
DDR4 থেকে DDR5 রূপান্তরের প্রভাব
বর্তমানে বাজারে DDR4 থেকে DDR5 র্যামের দিকে ধীরে ধীরে স্থানান্তর হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তির উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় DDR5-এর দাম তুলনামূলকভাবে উচ্চ। আবার DDR4 উৎপাদন কমে যাওয়ায় সেই র্যামের দামও কমার বদলে উল্টো বেড়েছে।
বাংলাদেশের বাজারে প্রভাব
বাংলাদেশে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের বাজার মূলত আমদানিনির্ভর। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে র্যামের দাম বাড়লে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে দেশীয় বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিও দামের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।
বর্তমানে ৮ জিবি বা ১৬ জিবি র্যামের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় কয়েক শ থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি গুনতে হচ্ছে—যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য স্পষ্টভাবেই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Corsair RAM
দাম কি কমবে?
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, স্বল্পমেয়াদে র্যামের দামে বড় ধরনের স্বস্তির সম্ভাবনা কম। তবে উৎপাদন স্বাভাবিক হলে এবং AI-কেন্দ্রিক চাহিদা কিছুটা স্থিতিশীল হলে ভবিষ্যতে বাজার ধীরে ধীরে ভারসাম্যে ফিরতে পারে।
সারসংক্ষেপ
র্যামের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি প্রযুক্তি খাতের একটি বৈশ্বিক বাস্তবতা। AI প্রযুক্তির বিস্তার, উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ এবং প্রযুক্তিগত রূপান্তরের ফলে এই চাপ তৈরি হয়েছে। ভোক্তাদের জন্য এটি সাময়িক হলেও, বাজার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।