

ছবি: জীবাশ্মবিদ মার্ক উইটনের করা ইলাস্ট্রেশন
বিজ্ঞানীরা ৬ কোটি ৯০ লাখ বছরের পুরানো এক প্রাচীন পাখির জীবাশ্মের খোঁজ পেয়েছেন, যা পৃথিবীর প্রাচীনতম আধুনিক পাখির জীবাশ্ম বলে দাবি করা হচ্ছে। পাখিটির নাম 'ভেগাভিস আইয়াই', যা হাঁস ও রাজহাঁসের আদি আত্মীয় হিসেবে পরিচিত।
এই আবিষ্কারটি ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষে ঘটে যাওয়া গণবিলুপ্তির আগে আধুনিক পাখিদের বিবর্তনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
বিজ্ঞানীরা বলেন, ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন করার মতো বৃহৎ বিলুপ্তির আগেই এই আধুনিক পাখিরা বিবর্তিত হয়।
এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এ, যেখানে ২০১১ সালে অ্যান্টার্কটিকা থেকে সংগ্রহ করা ‘ভেগাভিস আইএআই’ পাখিটির প্রায় সম্পূর্ণ মাথার খুলির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এই জীবাশ্মটি আধুনিক পাখির অস্তিত্বের শক্তিশালী প্রমাণ প্রদান করেছে, যা বিজ্ঞানীদের মধ্যে বহু বছর ধরে চলা বিতর্কের অবসান ঘটাতে পারে।
গবেষকরা আরও জানান, ভেগাভিস পাখিটির মাথার খুলিতে দেখা গেছে দীর্ঘ, সূঁচালো চঞ্চু এবং মস্তিষ্কের আকৃতি যা আজকের হাঁস ও রাজহাঁসের মতোই। তবে, আধুনিক জলচর পাখির সঙ্গে এর কিছু পার্থক্যও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভেগাভিসের চোয়ালের পেশী শক্তিশালী ছিল, যা তাকে পানির নীচে মাছ ধরতে সহায়তা করে।
গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন 'ওহাইও ইউনিভার্সিটি' এর বিজ্ঞানী ড. ক্রিস্টোফার টরেস, যিনি বর্তমানে 'ইউনিভার্সিটি অফ প্যাসিফিক' এ অধ্যাপনা করছেন।
তিনি বলেন, অ্যান্টার্কটিকা পাখির বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল, যেখানে বন ও নদী ছিল, যা প্রাথমিক পাখিদের জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল গড়ে তুলেছিল।
ড. প্যাট্রিক ও’কনর, 'ওহাইও ইউনিভার্সিটি' এর অধ্যাপক, বলেন, "এই জীবাশ্ম থেকে আধুনিক পাখির শুরুর দিনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ গল্প শোনার সুযোগ মিলেছে।"
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই আবিষ্কার আধুনিক পাখির বিবর্তন এবং তাদের আদি পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে।