

মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি এক উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছে, যা বৈজ্ঞানিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। তাদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, গ্রহাণু ২০২৪ ওয়াইআরফোর পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এবং এর পৃথিবীতে আঘাত করার সম্ভাবনা প্রায় ৩.১ শতাংশ। এই গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তবে এটি মাঝ-আকাশেই বিস্ফোরিত হতে পারে, যা প্রায় আট মেগাটন টিএনটি শক্তির সমতুল্য হবে। এমন বিস্ফোরণের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
নাসার বিজ্ঞানীদের মতে, এই গ্রহাণুটির আকার ১৩০ থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত চওড়া হতে পারে। যদি এটি পৃথিবীর বুকে আঘাত হানে, তবে ঢাকা, মুম্বই, কলকাতা, আবিদজান, লাগোস এবং খার্তুমের মতো জনবহুল শহরগুলোর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আটলান্টিক মহাসাগর, আফ্রিকা, আরব সাগর এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এর প্রভাব পড়তে পারে।
গ্রহাণুটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে নাসা জানিয়েছে, এপ্রিল মাস পর্যন্ত এর উপর নজর রাখা হবে। এরপর এটি দৃষ্টির বাইরে চলে যাবে এবং আবার দেখা মিলতে পারে ২০২৮ সালের জুন মাসে। তখনই কেবল এর অবস্থান ও গতিপথ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। এর আগে নাসা জানিয়েছিল, এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত করার সম্ভাবনা ২.৩ শতাংশ। তবে সাম্প্রতিক হিসাবে এই সম্ভাবনা বেড়ে ৩.১ শতাংশে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তবে এটি মাঝ-আকাশেই বিস্ফোরিত হতে পারে। তবে এর বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই বেশি হবে যে, আশেপাশের অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।
নাসা ইতিমধ্যে গ্রহাণুটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। তবে আপাতত এটি সরাসরি পৃথিবীর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা না দিলেও, ভবিষ্যতে এর গতিপথ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
এই ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, মহাকাশে অসংখ্য গ্রহাণু এবং অন্যান্য বস্তু পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে থাকতে পারে। তাই মহাকাশ গবেষণা এবং গ্রহাণু মোকাবিলার প্রযুক্তি উন্নয়নে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।