‘নির্দোষ’ প্রমাণের পরও ছয় বছর জেলে, অবশেষে মুক্তি

‘নির্দোষ’ প্রমাণের পরও ছয় বছর জেলে, অবশেষে মুক্তি
প্রকাশিত

২০১৩ সালে খালাস পেলেও ২০২০ সালে একই মামলায় আবারও গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় মাসুদ রানা পুতুল নামের এই ব্যক্তিকে। ২০ সাল থেকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। পরে চলতি বছরের ২১ মার্চ কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার খবর পেয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী ছুটে যান কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে। আদালতের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত হয়েও ছয় বছর ধরে অকারণে কারাবন্দি মোঃ মাসুদ রানা ওরফে ‘পুতুলের সাথে সাক্ষাৎ করেন লিগ্যাল এইডের পরিচালক । পরিদর্শনকালে যাচাই-বাছাই শেষে পুতুলের দীর্ঘদিনের বন্দিত্ব যে ভুলবশত হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়ার পর দ্রুত আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়।

বন্দীদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে পরিচালক বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। এই ধরনের ঘটনা দুঃখজনক হলেও আমরা সদা প্রস্তুত এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।”

পরিদর্শনকালে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাসরিন জাহান, ঢাকার জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মো. সায়েম খান, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহকারী পরিচালক ফারিন ফারজানা ও তৌফিকুল ইসলাম, সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার এবং কারা-কর্মকর্তাবৃন্দ।

এদিকে বুধবার সকাল থেকেই মাসুদ রানা ‘পুতুলের মুক্তির খবরে কারাফটকের সামনে অপেক্ষমাণ ছিলেন তার স্বজনেরা।

মাসুদ রানা পুতুল বলেন, লিগ্যাল এইড বন্দীদের জন্যে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে, তার দৃষ্টান্ত আমি নিজেই। বিগত ৬ বছরে আমার মামলার কোনো বিচার ছিলোনা, আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম এই জেলে ধুঁকে ধুঁকে আমাকে পঁচতে হবে কিন্তু লিগ্যাল এইড আমার জীবনের নতুন পথ দেখিয়েছে।

তিনি লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টার কথা  তুলে ধরে বলেন, "সংস্থাটি যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে বিচারপ্রার্থীদের কোনো দূর্দশা থাকবে না।

ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ সায়েম খান বলেন, কোন ব্যক্তি বিনা বিচারে কারাগারে আটক থাকলেও যেন আইনের সহায়তা পায় সেটি নিশ্চিত করাই লিগ্যাল এইডের দায়িত্ব । নিয়মতান্ত্রিকভাবে কারাগারে লিগ্যাল এইডের সভা চলাকালে জানতে পারি মাসুদ রানা প্রতুল ত্রুটির কারণে দীর্ঘদিন জেলে বন্দী রয়েছেন, পরবর্তীতে লিগ্যাল এইডে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মাসুদের মামলা অনুসন্ধানের মাধ্যমে পুতুলের মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে আবারও প্রমানিত হলো লিগ্যাল এইড সব সময়েই দু:স্থ্য মানুষ  এবং যারা ন্যায় বিচার পেতে অসমর্থ তাদের পাশে রয়েছে।

লিগ্যাল এইডের আন্তরিকতার ফলেই স্বল্প সময়ে পুতুলের মুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে জানান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ এর  জেলার একে এ এম মাসুম।

“দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পুতুলের মুক্তি যেন কিছুক্ষণের জন্য হলেও ক্লান্ত লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের মনে একধরনের তৃপ্তির সুবাস এনে দিয়েছে। তবে এখানেই থেমে নেই তাদের যাত্রা। বিচার প্রার্থীদের মুক্তি, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং ন্যায়বিচারের আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে—নতুন চ্যালেঞ্জ বুকে ধারণ করে এগিয়ে চলছে জাতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এক নিরন্তর প্রতিশ্রুতি নিয়ে।”

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com